আল কোরআনের মর্মবাণী - রমজানের প্রয়োজনীয় তাফসীর, হাদীস ও বাণী

আল্লাহকে কেন মানবো ? যৌক্তিকতা ও কারণ বিশ্লেষণে মাও: আবদুল হালীম হেলালী

 এই প্রশ্নটি ধরে একটি সাধারিত ধর্মীয় বা আধ্যাত্মিক দৃষ্টিভঙ্গির পর্যালোচনা করা উচিত, কারণ এটি ব্যক্তিগত বা বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গিতে উত্তর দেওয়া যায় না। বিভিন্ন ধর্ম এবং আধ্যাত্মিক পর্যালোচনায় এই প্রশ্নের উত্তর প্রদান হতে পারে।

ইসলামে, আল্লাহকে মানতে হয় একটি নিরাপদ, সর্বশক্তিশালী, সর্বজ্ঞ, সর্বকর্তৃত্ব এবং প্রতিরক্ষা করার বাধ্যতা সহিত একটি অসীম দিকের অসীম একমাত্র একমাত্র প্রবীণ প্রভু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ইসলামে মুসলিমদের দায়িত্ব হলো আল্লাহ একমাত্র পূজা করতে এবং তার নিরাপদতা, অসীম করুণা, এবং সর্বশক্তিশালী স্বভাব মানার জন্য তার প্রেম এবং শ্রদ্ধা অনুভব করতে।

তবে আল্লাহকে মানার বিষয়ে যৌক্তিক ব্যাখ্যা রয়েছে ।

একাধিক ধর্মে এই প্রশ্নের উত্তর ভিন্নভাবে দেওয়া হতে পারে, যার মধ্যে বিভিন্ন সাধারিত বা আধ্যাত্মিক সূচনা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। এটি একটি ব্যক্তিগত ও বিশেষ সম্প্রদায়ের ধারণা এবং বিশেষ বিশেষ ধর্মের ধারণা উভয়েই বিভিন্ন ভাবে উত্তর দেতে পারে।

আল্লাহকে মানার বিষয়ে নিচের ভিডিওটি দেখুন ...




করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়ার দোয়া

اللَّهمَّ إِنِّي أَعُوُذُ بِكَ مِنَ الْبرَصِ، وَالجُنُونِ، والجُذَامِ، وسّيءِ الأَسْقامِ.

 আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল বারাসি, ওয়াল জুনুনি, ওয়াল জুযামি,ওয়া সাইয়ি ইল আসক্কাম’।

অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় তিনবার বলবে ‘বিসমিল্লা-হিল্লাজী লা ইয়াদ্বুররু মাআসমিহি শাইউন ফিল আরদ্বি ওয়ালা ফিস সামা-ই, ওয়াহুয়াস সামী‘উল আলীম’, অর্থাৎ ‘আল্লাহর নামে, যাঁর নামের বরকতে আসমান ও জমিনের কোনো বস্তুই ক্ষতি করতে পারে না, তিনি সর্বশ্রোতা ও মহাজ্ঞানী’; সকাল হওয়া পর্যন্ত তার প্রতি কোনো হঠাৎ বিপদ আসবে না। আর যে তা সকালে তিনবার বলবে সন্ধ্যা পর্যন্ত তার ওপর কোনো হঠাৎ বিপদ আসবে না। (আবু দাউদ, হাদিস : ৫০৮৮)



মাহে রমজানের শুভেচ্ছা - রমজান মাসে কি করবেন? কেন করবেন? কিভাবে করবেন?

মাহে রমজানে রয়েছে মানব জাতির জন্য আল্লাহ তায়ালার অফুরন্ত দয়া, ক্ষমা এবং জাহান্নাম থেকে নাজাতের প্রতিশ্রুতি। আর এ মাসে ইবাদতের সওয়াবের মান বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে সত্তর গুণ। আর এ মাসেই রয়েছে সেই মহিমান্বিত লাইলাতুল কদর যা হাজার মাসের চেয়ে ও শ্রেষ্ঠ । সিয়ামের মত একটা গুরুত্ব পূর্ণ ইবাদতের জন্যে আল্লাহ তায়ালা এ মাসকে নির্ধারিত করেছেন এবং গোটা মাসের সিয়াম পালন ফরয করে দিয়েছেন। তাই পবিত্র মাহে রমজান অনন্য ফযীলতের মাস হিসেবে তার রয়েছে সীমাহীন মর্যাদা ও গুরুত্ব।

আর এসবের মূল করণ হলো, এ মাসেই আল্লাহ তায়ালার সর্বশেষ হিদায়াতের কিতাব “আল-কুরআন” নাযিল হওয়া। তাই আল কুরআন নাযিলের মাধ্যমে মাহে রমজান আল্লাহ তা’য়ালার পক্ষ থেকে মানব জাতির জন্য বয়ে নিয়ে এসেছে চিরন্তন মুক্তি ও কল্যাণের বাণী।

এই কোরআনই রমজান মাসকে দামী করেছে। তেমনি এ মাসের হক আদায়ে যারা সচেষ্ট হবে নিসন্দেহে তারাও দামী হবে তাতে কোন ভুল নেই।  রমজান মাসে সেহরী, ইফতার, তারাবীহসহ সকল সময়ে আল্লাহর রহমত ও অনাবিল প্রশান্তি  বিরাজ করে।  এ মাসে একটি ফরজ নামাজ ৭০টি ফরজ নামাজের সমান।  আর ১টি নফল ১টি ফরজ নামাজের সমান।  পাশাপাশি কোরআন তেলাওয়াতের ক্ষেত্রেও রয়েছে অভাবনীয় সুযোগ।  এক অক্ষরেই পাওয়া যাবে ৭০০ নেকী।  কেউ যদি নিজে না পড়ে অন্যের তেলাওয়াত শুনে তাতেও রয়েছি দ্বিগুণ সওয়াব।  দান খয়রাতেও রয়েছে এমন সওয়াব ।  পূর্ববর্তী কোন উম্মতের জন্য অল্প সময়ে নেকী অর্জনের এত বড় সুযোগ ছিলো না। 

এ বিষয়ে আল কোরআনে বলা হয়েছে : 

হে ঈমানদারগণ, তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে। যেমন ফরজ করা হয়েছিলো তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর। যেন তোমরা পরহেযগারী অর্জন করতে পার।
সূরা- বাকারা, আয়াত- ১৮৩।

রোজার গুরুত্ব :
রাসুল (সাঃ) বলেছন রমজান মাসে আমার উম্মত কে পাঁচটি নিয়ামত দান করা হয়েছে যা আগের উম্মতকে দেওয়া হয়নি -
(১) রোজাদারের মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহর কাছে মেশকের চেয়ে বেশী ঘ্রানযুক্ত
(২) ইফতার পর্যন্ত রোজাদারের জন্য ফেরেশতারা দোয়া করেন 
(৩) রোজাদারের জন্য প্রতিদিন জান্নাতকে সজ্জিত করা হয়
(৪) শয়তানকে বন্দি করা হয়
(৫) রমজানের শেষ রাতে সকল উম্মতকে মাফ করা হয়।



রোজার মর্যাদা ও উপকারিতা:
১) জাহান্নাম থেকে রক্ষা পাওয়ার ঢাল
২) জান্নাতে যাওয়ার উৎকৃষ্টতম উপায় এবং রাইয়ান নামক বিশেষ দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশের সুযোগ
৩) গুনাহ মোচনের অন্যতম মাধ্যম
৪) রোজা কিয়ামতের দিন মুমিন ব্যক্তির জন্য শুপারিশকারী হবে
৫) রোজার পুরষ্কার আল্লাহ নিজ হাতে প্রদান করবেন
৬) রোজার মাধ্যমে আচার-আচরণ ও চরিত্র সুন্দর হয়
৭) রোজা মানুষকে আখেরাত মুখী করে
৮) সামাজিক সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ব বোধ সৃষ্টি করে
৯) এটি আল্লাহ ও বান্দার মাঝে নিতান্ত গোপন ইবাদত তাই এর মাধ্যমে আল্লাহ ও বান্দার মাঝে সম্পর্ক দৃঢ়তর হয়
১০) আল্লাহর ইবাদতের এক অভূতপূর্ব ট্রেনিং স্বরুপ।

রমজান আসার পূর্বে যে দোয়াটি বেশী বেশী পড়া উচিত ...
“আল্লাহুম্মা বারিকলানা ফি রজাবা ওয়া শাবান ওয়া বাল্লিগনা রমজান”
অর্থ -হে খোদা রজব এবং শাবান মাসদয়কে তুমি আমাদের জন্যে মোবারক মাসে পরিনত করে দাও এবং আমাদের রমজান পর্যন্ত পৌছে দাও...


আসুন, রমজানের শুরুতেই পরিবর্তনের জন্য আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই। আত্মশুদ্গধি অর্জনের পূর্ণ প্রস্তুতি নিই। 
 রহমাত, মাগফিরাত এবং নাজাতের মাস মাহে রমজান।এ মাসেই মহা গ্রণ্থ  আল কুরআন নাজিল হযেছিল  তাই হাজার মাসের চাইতেও মূল্যবান এ মাস। এ মাসে ১টি নফল নামাজ ১টি ফরজ নামাজ এর সমান, আর ১টি ফরজ ৭০টি ফরজ নামাজ এর সমান। সুবহানআল্লাহ। এক রাকাত নামাজ ৭০ রাকাত নামাজের সমান,  কেউ যদি ফজর-এ ২ রাকাত, জোহরে ৪ রাকাত, আসরে ৪ রাকাত, মাগরিবে ৩ রাকাত এবং এশার ৪ রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করে তবে সে ১ দিনেই ১১৯০ রাকাত শুধু ফরজ নামাজই আদায় করলো আর বাকি নামাজ গুলো যোগ করলে তার পরিমান হবে আরো অনেক বেশি।
আমরা কতটুকু আমল যোগ করতে পেরেছি নিজেদের আমলনামায়। জীবনে আরেকবার রমজান পাবেন তার কোনো গেরান্টি নেই, জীবনের সকল গুনাহ মাপের এটাই সুবর্ণ সুযোগ। নামাজ ছাড়াও  কুরআন তিলাওয়াত এর ক্ষেত্রেও একই সুবর্ণ সুযোগ এক অক্ষরে যেটি ১০ নেকি ছিল অন্য সময়ে, আর রমজান মাসে সেটি ৭০০ নেকি। এ মাসে কাওকে ১ টাকা দান করলে ৭০ টাকাই দান করা হয়ে যাবে, ২ টাকা দান করলে ১৪০ টাকা দান করা হবে, ২ রাকাত নামাজ পড়লে ১৪০ রাকাত নামাজ পড়া  হয়ে যাবে। সকল ভালো কাজেই ১ এ ৭০, সারামাস এ সুযোগ আছে সচেতন হবার সময় এখনি।
শুধু তাই নয় সেহরী, ইফতার আর তারাবীহ নামাজের অনাবিল প্রশান্তি আপনার মনকে ১০০% পবিত্র করে দিবে। সুরা তারাবিহ এর চাইতে খতম তারাবিহকে বেশি গুরুত্ব দিন। পাশাপাশি  মিথ্যা কথা বলা থেকে বিরত থাকা, যাবতীয় অন্যায় থেকে বিরত থাকা   ছাড়াও  ভালো কাজে সহযোগিতা আর  মন্দ কাজ থেকে   দুরে থাকতে পারলেই  আপনার প্রতিটি রোজা হবে পরিশুদ্ধ। রোজা আর দোয়া কবুলের ক্ষেত্রে আর কোনো অন্তরায় থাকবেনা। এ মাসে বেশি বেশি ভালো কাজ করুন যেন এ মাস থেকে শিক্ষা নিয়ে বাকি জীবন ভালোভাবে কাটাতে পারেন। বিভিন্ন ফোরাম ব্লগ ফেইসবুক এ ভালো কাজের জন্য আহবান করুন, এতে যে সওয়াব পাবেন তাও অন্য সময়ের তুলনায় ৭০ গুন বেশি পাবেন। ইফতার এর আগে দোয়া কবুল হয় তাই এ সুযোগটিও হাতছাড়া করবেননা।
শব ই কদর এর রাতের অভাবনীয় সুযোগতো  থাকছেই যে রাতে দোয়া কবুলের ১০০% গেরান্টি  থাকে। আলহামদুলিল্লাহ। জান্নাত লাভের সুবর্ণ সুযোগ আপনাকে হাতছানি দিয়ে যাচ্ছে। এ মাসে সামর্থ্য থাকলে  কেউ ওমরাহ করেও আসতে পারেন। রমজান ছাড়াও মদিনা শরিফ এ ১ রাকাত নামাজ ৫০ হাজার রাকাত নামাজের সমান আর  মক্কা শরিফ এ ১ রাকাত নামাজ  ১ লক্ষ্ রাকাত নামাজের সমান। আর রমজান মাসে  সেই সওয়াব এর পরিমান যথাক্রমে ৩৫ লক্ষ এবং ৭০ লক্ষ রাকাত নামাজের সমান। শুধুমাত্র রমজান মাসের জন্যই এ সুযোগ। আমরা হয়ত অনেকেই এসব কথা জানি, যারা জানি তারা যেন মানার চেষ্টা করি, আর যারা জানিনা তারা যেন আরো জানার চেষ্টা করি।


দাইউস কাকে বলে এবং দাইউস ব্যক্তির পরিণতি কি?

প্রশ্নঃ দাইউস কাকে বলে এবং দাইউস ব্যক্তির পরিণতি কি?
==================================
উত্তরঃ দাইউস হলো সে ব্যক্তি যে কিনা তার পরিবার পরিজনকে সঠিক রাস্তায় পরিচালনা করেন না এবং পরিবার পরিজন সঠিক ভাবে না চললেও ভালো মনে করেন বা প্রতিবাদ করেন না।
যে ব্যক্তি তার স্ত্রী-সন্তানদের বেপর্দা বেহায়াপনা ও অশ্লীলতার সুযোগ দেয় তাকেও দাইউস বলা হয়।

♻ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন যে, “আল্লাহ তিন ব্যক্তির জন্য জান্নাত হারাম করেছেন। মাদকাসক্ত, পিতা-মাতার অবাধ্য এবং দাইউস, যে তার পরিবারের মধ্যে ব্যভিচারকে প্রশ্রয় দেয়” (মুসনাদে আহমাদ: ২/৬৯)

♻ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এরশাদ করেছেন : ‘দাইউস ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেনঃ হে আল্লাহ্‌র রাসূল (সাঃ)! দাইউস কে? উত্তরে রাসুলূল্লাহ (সাঃ) বললেন, ‘যে ব্যক্তি তার পরিবারে আল্লাহ্‌র আদেশ-নিষেধ বাস্তবায়নের ব্যাপারে কোন তৎপরতা অবলম্বন করে না বরং উপেক্ষা করে চলে।’ অন্য বর্ণনায় এসেছে যে, ‘দাইউস হল সে, যে তার পরিবারে বেহায়পনার বাস্তবায়নে সন্তষ্ট ও পরিতুষ্ট।’ (আহমদ)

♻ কোরআনে আল্লাহ বলেন, “তোমরা নিজেরা জাহান্নাম থেকে আত্মরক্ষা কর এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা কর। যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর; যার উপর নিয়োজিত রয়েছেন কঠোর হৃদয় সম্পন্ন ফিরিশতাগণ, তারা আল্লাহ যা নির্দেশ করেন তা বাস্তবায়নে অবাধ্য হোন না, আর তাদের যা নির্দেশ প্রদান করা হয়, তা-ই তামিল করে’’।
( সূরা আত-তাহরীম: ৬)

♻ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং তোমাদের প্রত্যেককেই তার দায়িত্বাধীনদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে, রাষ্ট্রনেতা তার প্রজাদের সম্পর্কে দায়িত্বশীল আর তাকে তাদের পরিচালনার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। একজন পুরুষ লোক তার পরিবারের ব্যাপারে দায়িত্বশীল, তাকে তাদের পরিচালনার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। একজন মহিলা তার স্বামীর ঘরের সার্বিক ব্যাপারে দায়িত্বশীলা, তাকে সেটার পরিচালনার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। একজন পরিচারক তার মালিকের সম্পদের সংরক্ষক, আর তাকে সেটার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এক কথায় তোমরা সবাই দায়িত্বশীল আর সবাই জিজ্ঞাসিত হবে। সে দায়িত্ব সম্পর্কে”। (বুখারী : ৭১৩৮; মুসলিম: ১৭০৫)

♻ আমি যদি নিজেকে মুসলমান হিসাবে দাবী করি তাহলে অবশ্যই কোরআন হাদীস মেনে চলবো। উপরের কোরআন ও হাদীস গুলো যদি নিজের সাথে মিলিয়ে নেই তাহলে কি দেখতে পাবো ? আমি কি সঠিক ভাবে আমার দায়িত্ব পালন করছি ? আমার পরিবার কে সঠিক নিয়মে পরিচালনা করছি ? আমি জোর গলায় বলতে পারি, বর্তমানে হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া কেউ আমরা নিজেরাতো সঠিক নিয়মে চলছি না বরং পরিবারকেও আমরা ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছি।

~উত্তর দিয়েছেন শাইখ Abdullahil Hadi

মাহে রমজানের ডিজিটাল সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে, এখনি সচেতন হওয়া উচিত

শান্তির বার্তা নিয়ে মাহে রমজান আমাদের মাঝে এসে উপস্থিত হয়েছিলো।  আস্তে আস্তে আবার চলেও যাচ্ছে।  সাথে চলে যাচ্ছে রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের সকল সুযোগ।  আমরাকি পেরেছি সুযোগ গুলোকে কাজে লাগাতে।  মাহে রমজানের পুরোপুরি না হোক, নূন্যতম হক আদায় করতে কতটুকু পেরেছি?

আমরা সবাই জানি কুরআন নাজিলের মাস মাহে রমজান।  এই কোরআনই রমজান মাসকে দামী করেছে। তেমনি এ মাসের হক আদায়ে যারা সচেষ্ট হবে নিসন্দেহে তারাও দামী হবে তাতে কোন ভুল নেই।  রমজান মাসে সেহরী, ইফতার, তারাবীহসহ সকল সময়ে আল্লাহর রহমত ও অনাবিল প্রশান্তি  বিরাজ করে।  এ মাসে একটি ফরজ নামাজ ৭০টি ফরজ নামাজের সমান।  আর ১টি নফল ১টি ফরজ নামাজের সমান।  পাশাপাশি কোরআন তেলাওয়াতের ক্ষেত্রেও রয়েছে অভাবনীয় সুযোগ।  এক অক্ষরেই পাওয়া যাবে ৭০০ নেকী।  কেউ যদি নিজে না পড়ে অন্যের তেলাওয়াত শুনে তাতেও রয়েছি দ্বিগুণ সওয়াব।  দান খয়রাতেও রয়েছে এমন সওয়াব ।  পূর্ববর্তী কোন উম্মতের জন্য অল্প সময়ে নেকী অর্জনের এত বড় সুযোগ ছিলো না।  কাজেই সুযোগ কাজে লাগানো উচিত। আর মাত্র অল্প কদিন। তারপর আর এ সুবর্ণ সুযোগটি থাকছে না।


মাহে রমজানে রয়েছে মানব জাতির জন্য আল্লাহ তায়ালার অফুরন্ত দয়া

 মাহে রমজানে রয়েছে মানব জাতির জন্য আল্লাহ তায়ালার অফুরন্ত দয়া, ক্ষমা এবং জাহান্নাম থেকে নাজাতের প্রতিশ্রুতি। আর এ মাসে ইবাদতের সওয়াবের মান বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে সত্তর গুণ। আর এ মাসেই রয়েছে সেই মহিমান্বিত লাইলাতুল কদর যা হাজার মাসের চেয়ে ও শ্রেষ্ঠ । সিয়ামের মত একটা গুরুত্ব পূর্ণ ইবাদতের জন্যে আল্লাহ তায়ালা এ মাসকে নির্ধারিত করেছেন এবং গোটা মাসের সিয়াম পালন ফরয করে দিয়েছেন। তাই পবিত্র মাহে রমজান অনন্য ফযীলতের মাস হিসেবে তার রয়েছে সীমাহীন মর্যাদা ও গুরুত্ব।
আর এসবের মূল করণ হলো, এ মাসেই আল্লাহ তায়ালার সর্বশেষ হিদায়াতের কিতাব “আল-কুরআন” নাযিল হওয়া। তাই আল কুরআন নাযিলের মাধ্যমে মাহে রমজান আল্লাহ তা’য়ালার পক্ষ থেকে মানব জাতির জন্য বয়ে নিয়ে এসেছে চিরন্তন মুক্তি ও কল্যাণের বাণী।

চেয়ারে বসে নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে মাসয়ালা

চেয়ারে বসে নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে মাসয়ালা  :

চেয়ারে বসে নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে অনেকে সঠিক মাসয়ালা জানেন না ।  তাই ইবাদত কবুলের ক্ষেত্রে যথেষ্ট পরিমাণ সন্দেহ থেকে যায় ।   শীত উপেক্ষা করে হাতের কাজ বাদ দিয়ে কষ্ট করে ওযু করে নামাজ পড়বেন আর সে নামাজ কবুল হবে না, সে কষ্ট কোথায় রাখবেন ।  তাই কোন প্রকার সন্দেহ রাখা যাবে না নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে সামান্য ঘাটতির জন্য ।   কোমরে ব্যাথার জন্য অনেকে চেয়ারে বসে নামাজ আদায় করে থাকেন, তাদের উদ্দেশ্যে বলছি আপনাদের নামাজ আদায় হচ্ছে না।  এ নামাজ সম্পূর্ণভাবে অসম্পূর্ণ । আর অসম্পূর্ণ নামাজ আল্লাহর দরবারে আদায় হওয়ার পথে  প্রধান অন্তরায় ।   চেয়ারে বসে নামাজ পড়া তখনই প্রযোজ্য হবে যদি আপনি বসে নামাজ আদায় করতে না পারেন । কিন্তু অনেকে কোমরে ব্যাথার জন্য নামাজের শুরু থেকেই বসে পড়েন ।  কোমরে ব্যাথার জন্য তিনি যদি রুকু বা সিজদা করতে না পারেন তখনই কেবল তিনি বসে তা আদায় করবেন ।  এর পূর্বে দাঁড়িয়েই নামাজ শুরু করতে হবে ।   ইমাম যখন রুকুতে যাবে তখন তিনি বসে রুকু করতে পারবেন যদি ওনার কোমর ব্যাথা বা অন্য কোন সমস্যা থাকে । একইভাবে বসে বসে সিজদা করবেন মাথা নিচু করে ।  অনেকে সঠিকভাবে সিজদাও করেন না ।  সঠিকভাবে সিজদা করার জন্য সামনে একটি টুল রাখতে পারেন । বসে বসে দায়সারাভাবে  যারা নামাজ পড়ছেন আজ থেকেই সতর্ক হয়ে যান ।   আপনি হেটে হেটে মসজিদে গমন করছেন, আর কোমর ব্যাথার অযুহাতে শুরু থেকেই বসে নামাজ শুরু করছেন ।   আপনার দাড়ানোয় সমস্যা থাকলেতো হেটে হেটে মসজিদেও আসা সম্ভব ছিলো না । আসন্ন রমজানে আমাদের যাদের এরকম সমস্যা আছে আমরা যেন সঠিকভাবে নামাজ আদায় করি । তাওবা করে আবার নামাজ শুরু করুন, আল্লাহ আমাদের সবাইকে কবুল করুন এবং ক্ষমা করে দিন, আমীন ।
- মাওলানা আবদুল হালীম হেলালী 

Welcome To Ramadan Collection - Al Quran Information, Quran Tweets, Hadith and Necessary Tafsir

Welcome To Ramadan Collection - Al Quran Information, Quran Tweets, Hadith and Necessary Tafsir :  Al Quran Information, Quran Tweets, Hadith and Necessary Tafsir are available here. Ramadan prayer, Ramadan news and Ramadan information is available in this site. Besides আল কোরআনের মর্মবাণী, রমজানের করণীয়, রমজান মাসে নামাজ, কুরআনের তাফসীর এবং প্রয়োজনীয় হাদিস সম্পর্কে এখানে আলোকপাত করা হয়েছে । মাহে রমজানের শুভেচ্ছা সবাইকে । সাথে রমজানের হক আদায়ে সচেষ্ট থাকুন প্রতিনিয়ত । 

যে কয়েকটি কাজ করলে আপনার রোজা রাখতে কোন সমস্যা হবে না

যে কয়েকটি কাজ করলে আপনার রোজা রাখতে কোন সমস্যা হবে না :

ভিডিওতে দেখুন বিস্তারিত...


ধ্বংস তার জন্য, যে রমজান পেল কিন্তু গুনাহ মাফ করাতে পারলো না

ধ্বংস তার জন্য, যে রমজান পেল কিন্তু গুনাহ মাফ করাতে পারলো না ;

ভিডিওতে দেখুন বিস্তারিত...


এক নজরে মাহে রমজান

এক নজরে মাহে রমজান  :

হে ঈমানদারগণ, তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে। যেমন ফরজ করা হয়েছিলো তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর। যেন তোমরা পরহেযগারী অর্জন করতে পার।
সূরা- বাকারা, আয়াত- ১৮৩।

রোজার গুরুত্ব :
রাসুল (সাঃ) বলেছন রমজান মাসে আমার উম্মত কে পাঁচটি নিয়ামত দান করা হয়েছে যা আগের উম্মতকে দেওয়া হয়নি -
(১) রোজাদারের মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহর কাছে মেশকের চেয়ে বেশী ঘ্রানযুক্ত
(২) ইফতার পর্যন্ত রোজাদারের জন্য ফেরেশতারা দোয়া করেন 
(৩) রোজাদারের জন্য প্রতিদিন জান্নাতকে সজ্জিত করা হয়
(৪) শয়তানকে বন্দি করা হয়
(৫) রমজানের শেষ রাতে সকল উম্মতকে মাফ করা হয়।


রোজার মর্যাদা ও উপকারিতা:
১) জাহান্নাম থেকে রক্ষা পাওয়ার ঢাল
২) জান্নাতে যাওয়ার উৎকৃষ্টতম উপায় এবং রাইয়ান নামক বিশেষ দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশের সুযোগ
৩) গুনাহ মোচনের অন্যতম মাধ্যম
৪) রোজা কিয়ামতের দিন মুমিন ব্যক্তির জন্য শুপারিশকারী হবে
৫) রোজার পুরষ্কার আল্লাহ নিজ হাতে প্রদান করবেন
৬) রোজার মাধ্যমে আচার-আচরণ ও চরিত্র সুন্দর হয়
৭) রোজা মানুষকে আখেরাত মুখী করে
৮) সামাজিক সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ব বোধ সৃষ্টি করে
৯) এটি আল্লাহ ও বান্দার মাঝে নিতান্ত গোপন ইবাদত তাই এর মাধ্যমে আল্লাহ ও বান্দার মাঝে সম্পর্ক দৃঢ়তর হয়
১০) আল্লাহর ইবাদতের এক অভূতপূর্ব ট্রেনিং স্বরুপ।

রমজান আসার পূর্বে যে দোয়াটি বেশী বেশী পড়া উচিত ...
“আল্লাহুম্মা বারিকলানা ফি রজাবা ওয়া শাবান ওয়া বাল্লিগনা রমজান”
অর্থ -হে খোদা রজব এবং শাবান মাসদয়কে তুমি আমাদের জন্যে মোবারক মাসে পরিনত করে দাও এবং আমাদের রমজান পর্যন্ত পৌছে দাও...

অঢেল সওয়াব অর্জন এর এ সুবর্ণ সুযোগ কাজে লাগাতে চেষ্টা করি। রমজানের শুরুতেই পরিবর্তনের জন্য আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই। আত্মশুদ্গধি অর্জনের পূর্ণ প্রস্তুতি নিই। 
 রহমাত, মাগফিরাত এবং নাজাতের মাস মাহে রমজান।এ মাসেই মহা গ্রণ্থ  আল কুরআন নাজিল হযেছিল  তাই হাজার মাসের চাইতেও মূল্যবান এ মাস। এ মাসে ১টি নফল নামাজ ১টি ফরজ নামাজ এর সমান, আর ১টি ফরজ ৭০টি ফরজ নামাজ এর সমান। সুবহানআল্লাহ। এক রাকাত নামাজ ৭০ রাকাত নামাজের সমান,  কেউ যদি ফজর-এ ২ রাকাত, জোহরে ৪ রাকাত, আসরে ৪ রাকাত, মাগরিবে ৩ রাকাত এবং এশার ৪ রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করে তবে সে ১ দিনেই ১১৯০ রাকাত শুধু ফরজ নামাজই আদায় করলো আর বাকি নামাজ গুলো যোগ করলে তার পরিমান হবে আরো অনেক বেশি।
নিজেই অঙ্ক মিলিয়ে নিন সুযোগ হাতছাড়া করবেন নাকি এখনি লুফে নিবেন। আমরা কতটুকু আমল যোগ করতে পেরেছি নিজেদের আমলনামায়। জীবনে আরেকবার রমজান পাবেন তার কোনো গেরান্টি নেই, জীবনের সকল গুনাহ মাপের এটাই সুবর্ণ সুযোগ। নামাজ ছাড়াও  কুরআন তিলাওয়াত এর ক্ষেত্রেও একই সুবর্ণ সুযোগ এক অক্ষরে যেটি ১০ নেকি ছিল অন্য সময়ে, আর রমজান মাসে সেটি ৭০০ নেকি। এ মাসে কাওকে ১ টাকা দান করলে ৭০ টাকাই দান করা হয়ে যাবে, ২ টাকা দান করলে ১৪০ টাকা দান করা হবে, ২ রাকাত নামাজ পড়লে ১৪০ রাকাত নামাজ পড়া  হয়ে যাবে। সকল ভালো কাজেই ১ এ ৭০, সারামাস এ সুযোগ আছে সচেতন হবার সময় এখনি।
শুধু তাই নয় সেহরী, ইফতার আর তারাবীহ নামাজের অনাবিল প্রশান্তি আপনার মনকে ১০০% পবিত্র করে দিবে। সুরা তারাবিহ এর চাইতে খতম তারাবিহকে বেশি গুরুত্ব দিন। পাশাপাশি  মিথ্যা কথা বলা থেকে বিরত থাকা, যাবতীয় অন্যায় থেকে বিরত থাকা   ছাড়াও  ভালো কাজে সহযোগিতা আর  মন্দ কাজ থেকে   দুরে থাকতে পারলেই  আপনার প্রতিটি রোজা হবে পরিশুদ্ধ। রোজা আর দোয়া কবুলের ক্ষেত্রে আর কোনো অন্তরায় থাকবেনা। এ মাসে বেশি বেশি ভালো কাজ করুন যেন এ মাস থেকে শিক্ষা নিয়ে বাকি জীবন ভালোভাবে কাটাতে পারেন। বিভিন্ন ফোরাম ব্লগ ফেইসবুক এ ভালো কাজের জন্য আহবান করুন, এতে যে সওয়াব পাবেন তাও অন্য সময়ের তুলনায় ৭০ গুন বেশি পাবেন। ইফতার এর আগে দোয়া কবুল হয় তাই এ সুযোগটিও হাতছাড়া করবেননা।
শব ই কদর এর রাতের অভাবনীয় সুযোগতো  থাকছেই যে রাতে দোয়া কবুলের ১০০% গেরান্টি  থাকে। আলহামদুলিল্লাহ। জান্নাত লাভের সুবর্ণ সুযোগ আপনাকে হাতছানি দিয়ে যাচ্ছে। এ মাসে সামর্থ্য থাকলে  কেউ ওমরাহ করেও আসতে পারেন। রমজান ছাড়াও মদিনা শরিফ এ ১ রাকাত নামাজ ৫০ হাজার রাকাত নামাজের সমান আর  মক্কা শরিফ এ ১ রাকাত নামাজ  ১ লক্ষ্ রাকাত নামাজের সমান। আর রমজান মাসে  সেই সওয়াব এর পরিমান যথাক্রমে ৩৫ লক্ষ এবং ৭০ লক্ষ রাকাত নামাজের সমান। শুধুমাত্র রমজান মাসের জন্যই এ সুযোগ। আমরা হয়ত অনেকেই এসব কথা জানি, যারা জানি তারা যেন মানার চেষ্টা করি, আর যারা জানিনা তারা যেন আরো জানার চেষ্টা করি।

মাহে রমজানের গজল ও ইসলামী সংগীত

মাহে রমজানের গজল ও ইসলামী সংগীত :

১। মাহে রমজান এলো বছর ঘুরে, মুমিন মুসলমানের দ্বারে দ্বারে



২। মাহে রমজান এর গানের এলবাম...

 

তারাবীহ নামাজ না পড়লে রোজা হবে কি

তারাবীহ নামাজ না পড়লে রোজা হবে কি

তারাবীহ নামাজ পড়লে অঢেল সওয়াব, না পড়লে কোন সওয়াব নেই । তবে এ জন্য রোজার কোন ক্ষতি হবে না ।  
তারাবীজের সওয়াব আলাদা, রোজার সওয়াব আলাদা । তারাবীহ রোজাকে পরিপূর্ণ করে এবং আল্লাহর অপার সন্তুষ্টির অন্যতম মাধ্যম এ তারাবীহ ।