আল কোরআনের মর্মবাণী - রমজানের প্রয়োজনীয় তাফসীর, হাদীস ও বাণী: 2017

মাহে রমজানের ডিজিটাল সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে, এখনি সচেতন হওয়া উচিত

শান্তির বার্তা নিয়ে মাহে রমজান আমাদের মাঝে এসে উপস্থিত হয়েছিলো।  আস্তে আস্তে আবার চলেও যাচ্ছে।  সাথে চলে যাচ্ছে রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের সকল সুযোগ।  আমরাকি পেরেছি সুযোগ গুলোকে কাজে লাগাতে।  মাহে রমজানের পুরোপুরি না হোক, নূন্যতম হক আদায় করতে কতটুকু পেরেছি?

আমরা সবাই জানি কুরআন নাজিলের মাস মাহে রমজান।  এই কোরআনই রমজান মাসকে দামী করেছে। তেমনি এ মাসের হক আদায়ে যারা সচেষ্ট হবে নিসন্দেহে তারাও দামী হবে তাতে কোন ভুল নেই।  রমজান মাসে সেহরী, ইফতার, তারাবীহসহ সকল সময়ে আল্লাহর রহমত ও অনাবিল প্রশান্তি  বিরাজ করে।  এ মাসে একটি ফরজ নামাজ ৭০টি ফরজ নামাজের সমান।  আর ১টি নফল ১টি ফরজ নামাজের সমান।  পাশাপাশি কোরআন তেলাওয়াতের ক্ষেত্রেও রয়েছে অভাবনীয় সুযোগ।  এক অক্ষরেই পাওয়া যাবে ৭০০ নেকী।  কেউ যদি নিজে না পড়ে অন্যের তেলাওয়াত শুনে তাতেও রয়েছি দ্বিগুণ সওয়াব।  দান খয়রাতেও রয়েছে এমন সওয়াব ।  পূর্ববর্তী কোন উম্মতের জন্য অল্প সময়ে নেকী অর্জনের এত বড় সুযোগ ছিলো না।  কাজেই সুযোগ কাজে লাগানো উচিত। আর মাত্র অল্প কদিন। তারপর আর এ সুবর্ণ সুযোগটি থাকছে না।


মাহে রমজানে রয়েছে মানব জাতির জন্য আল্লাহ তায়ালার অফুরন্ত দয়া

 মাহে রমজানে রয়েছে মানব জাতির জন্য আল্লাহ তায়ালার অফুরন্ত দয়া, ক্ষমা এবং জাহান্নাম থেকে নাজাতের প্রতিশ্রুতি। আর এ মাসে ইবাদতের সওয়াবের মান বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে সত্তর গুণ। আর এ মাসেই রয়েছে সেই মহিমান্বিত লাইলাতুল কদর যা হাজার মাসের চেয়ে ও শ্রেষ্ঠ । সিয়ামের মত একটা গুরুত্ব পূর্ণ ইবাদতের জন্যে আল্লাহ তায়ালা এ মাসকে নির্ধারিত করেছেন এবং গোটা মাসের সিয়াম পালন ফরয করে দিয়েছেন। তাই পবিত্র মাহে রমজান অনন্য ফযীলতের মাস হিসেবে তার রয়েছে সীমাহীন মর্যাদা ও গুরুত্ব।
আর এসবের মূল করণ হলো, এ মাসেই আল্লাহ তায়ালার সর্বশেষ হিদায়াতের কিতাব “আল-কুরআন” নাযিল হওয়া। তাই আল কুরআন নাযিলের মাধ্যমে মাহে রমজান আল্লাহ তা’য়ালার পক্ষ থেকে মানব জাতির জন্য বয়ে নিয়ে এসেছে চিরন্তন মুক্তি ও কল্যাণের বাণী।

চেয়ারে বসে নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে মাসয়ালা

চেয়ারে বসে নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে মাসয়ালা  :

চেয়ারে বসে নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে অনেকে সঠিক মাসয়ালা জানেন না ।  তাই ইবাদত কবুলের ক্ষেত্রে যথেষ্ট পরিমাণ সন্দেহ থেকে যায় ।   শীত উপেক্ষা করে হাতের কাজ বাদ দিয়ে কষ্ট করে ওযু করে নামাজ পড়বেন আর সে নামাজ কবুল হবে না, সে কষ্ট কোথায় রাখবেন ।  তাই কোন প্রকার সন্দেহ রাখা যাবে না নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে সামান্য ঘাটতির জন্য ।   কোমরে ব্যাথার জন্য অনেকে চেয়ারে বসে নামাজ আদায় করে থাকেন, তাদের উদ্দেশ্যে বলছি আপনাদের নামাজ আদায় হচ্ছে না।  এ নামাজ সম্পূর্ণভাবে অসম্পূর্ণ । আর অসম্পূর্ণ নামাজ আল্লাহর দরবারে আদায় হওয়ার পথে  প্রধান অন্তরায় ।   চেয়ারে বসে নামাজ পড়া তখনই প্রযোজ্য হবে যদি আপনি বসে নামাজ আদায় করতে না পারেন । কিন্তু অনেকে কোমরে ব্যাথার জন্য নামাজের শুরু থেকেই বসে পড়েন ।  কোমরে ব্যাথার জন্য তিনি যদি রুকু বা সিজদা করতে না পারেন তখনই কেবল তিনি বসে তা আদায় করবেন ।  এর পূর্বে দাঁড়িয়েই নামাজ শুরু করতে হবে ।   ইমাম যখন রুকুতে যাবে তখন তিনি বসে রুকু করতে পারবেন যদি ওনার কোমর ব্যাথা বা অন্য কোন সমস্যা থাকে । একইভাবে বসে বসে সিজদা করবেন মাথা নিচু করে ।  অনেকে সঠিকভাবে সিজদাও করেন না ।  সঠিকভাবে সিজদা করার জন্য সামনে একটি টুল রাখতে পারেন । বসে বসে দায়সারাভাবে  যারা নামাজ পড়ছেন আজ থেকেই সতর্ক হয়ে যান ।   আপনি হেটে হেটে মসজিদে গমন করছেন, আর কোমর ব্যাথার অযুহাতে শুরু থেকেই বসে নামাজ শুরু করছেন ।   আপনার দাড়ানোয় সমস্যা থাকলেতো হেটে হেটে মসজিদেও আসা সম্ভব ছিলো না । আসন্ন রমজানে আমাদের যাদের এরকম সমস্যা আছে আমরা যেন সঠিকভাবে নামাজ আদায় করি । তাওবা করে আবার নামাজ শুরু করুন, আল্লাহ আমাদের সবাইকে কবুল করুন এবং ক্ষমা করে দিন, আমীন ।
- মাওলানা আবদুল হালীম হেলালী