মাহে রমজানে রয়েছে মানব জাতির জন্য আল্লাহ তায়ালার অফুরন্ত দয়া, ক্ষমা
এবং জাহান্নাম থেকে নাজাতের প্রতিশ্রুতি। আর এ মাসে ইবাদতের সওয়াবের মান
বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে সত্তর গুণ। আর এ মাসেই রয়েছে সেই মহিমান্বিত লাইলাতুল
কদর যা হাজার মাসের চেয়ে ও শ্রেষ্ঠ । সিয়ামের মত একটা গুরুত্ব পূর্ণ
ইবাদতের জন্যে আল্লাহ তায়ালা এ মাসকে নির্ধারিত করেছেন এবং গোটা মাসের
সিয়াম পালন ফরয করে দিয়েছেন। তাই পবিত্র মাহে রমজান অনন্য ফযীলতের মাস
হিসেবে তার রয়েছে সীমাহীন মর্যাদা ও গুরুত্ব।
আর এসবের মূল করণ হলো,
এ মাসেই আল্লাহ তায়ালার সর্বশেষ হিদায়াতের কিতাব “আল-কুরআন” নাযিল হওয়া।
তাই আল কুরআন নাযিলের মাধ্যমে মাহে রমজান আল্লাহ তা’য়ালার পক্ষ থেকে মানব
জাতির জন্য বয়ে নিয়ে এসেছে চিরন্তন মুক্তি ও কল্যাণের বাণী।
এই কোরআনই রমজান মাসকে দামী করেছে। তেমনি এ মাসের হক
আদায়ে যারা সচেষ্ট হবে নিসন্দেহে তারাও দামী হবে তাতে কোন ভুল নেই। রমজান
মাসে সেহরী, ইফতার, তারাবীহসহ সকল সময়ে আল্লাহর রহমত ও অনাবিল প্রশান্তি
বিরাজ করে। এ মাসে একটি ফরজ নামাজ ৭০টি ফরজ নামাজের সমান। আর ১টি নফল ১টি
ফরজ নামাজের সমান। পাশাপাশি কোরআন তেলাওয়াতের ক্ষেত্রেও রয়েছে অভাবনীয়
সুযোগ। এক অক্ষরেই পাওয়া যাবে ৭০০ নেকী। কেউ যদি নিজে না পড়ে অন্যের
তেলাওয়াত শুনে তাতেও রয়েছি দ্বিগুণ সওয়াব। দান খয়রাতেও রয়েছে এমন সওয়াব ।
পূর্ববর্তী কোন উম্মতের জন্য অল্প সময়ে নেকী অর্জনের এত বড় সুযোগ ছিলো
না।
এ বিষয়ে আল কোরআনে বলা হয়েছে :
হে
ঈমানদারগণ, তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে। যেমন ফরজ করা হয়েছিলো তোমাদের
পূর্ববর্তী লোকদের উপর। যেন তোমরা পরহেযগারী অর্জন করতে পার।
সূরা- বাকারা, আয়াত- ১৮৩।
সূরা- বাকারা, আয়াত- ১৮৩।
রোজার গুরুত্ব :
রাসুল (সাঃ) বলেছন রমজান মাসে আমার উম্মত কে পাঁচটি নিয়ামত দান করা হয়েছে যা আগের উম্মতকে দেওয়া হয়নি -
(১) রোজাদারের মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহর কাছে মেশকের চেয়ে বেশী ঘ্রানযুক্ত
(২) ইফতার পর্যন্ত রোজাদারের জন্য ফেরেশতারা দোয়া করেন
(৩) রোজাদারের জন্য প্রতিদিন জান্নাতকে সজ্জিত করা হয়
(৪) শয়তানকে বন্দি করা হয়
(৫) রমজানের শেষ রাতে সকল উম্মতকে মাফ করা হয়।
(২) ইফতার পর্যন্ত রোজাদারের জন্য ফেরেশতারা দোয়া করেন
(৩) রোজাদারের জন্য প্রতিদিন জান্নাতকে সজ্জিত করা হয়
(৪) শয়তানকে বন্দি করা হয়
(৫) রমজানের শেষ রাতে সকল উম্মতকে মাফ করা হয়।
রোজার মর্যাদা ও উপকারিতা:
১) জাহান্নাম থেকে রক্ষা পাওয়ার ঢাল
২) জান্নাতে যাওয়ার উৎকৃষ্টতম উপায় এবং রাইয়ান নামক বিশেষ দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশের সুযোগ
৩) গুনাহ মোচনের অন্যতম মাধ্যম
৪) রোজা কিয়ামতের দিন মুমিন ব্যক্তির জন্য শুপারিশকারী হবে
৫) রোজার পুরষ্কার আল্লাহ নিজ হাতে প্রদান করবেন
৬) রোজার মাধ্যমে আচার-আচরণ ও চরিত্র সুন্দর হয়
৭) রোজা মানুষকে আখেরাত মুখী করে
৮) সামাজিক সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ব বোধ সৃষ্টি করে
৯) এটি আল্লাহ ও বান্দার মাঝে নিতান্ত গোপন ইবাদত তাই এর মাধ্যমে আল্লাহ ও বান্দার মাঝে সম্পর্ক দৃঢ়তর হয়
১০) আল্লাহর ইবাদতের এক অভূতপূর্ব ট্রেনিং স্বরুপ।
রমজান আসার পূর্বে যে দোয়াটি বেশী বেশী পড়া উচিত ...
“আল্লাহুম্মা বারিকলানা ফি রজাবা ওয়া শাবান ওয়া বাল্লিগনা রমজান”
অর্থ -হে খোদা রজব এবং শাবান মাসদয়কে তুমি আমাদের জন্যে মোবারক মাসে পরিনত করে দাও এবং আমাদের রমজান পর্যন্ত পৌছে দাও...
২) জান্নাতে যাওয়ার উৎকৃষ্টতম উপায় এবং রাইয়ান নামক বিশেষ দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশের সুযোগ
৩) গুনাহ মোচনের অন্যতম মাধ্যম
৪) রোজা কিয়ামতের দিন মুমিন ব্যক্তির জন্য শুপারিশকারী হবে
৫) রোজার পুরষ্কার আল্লাহ নিজ হাতে প্রদান করবেন
৬) রোজার মাধ্যমে আচার-আচরণ ও চরিত্র সুন্দর হয়
৭) রোজা মানুষকে আখেরাত মুখী করে
৮) সামাজিক সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ব বোধ সৃষ্টি করে
৯) এটি আল্লাহ ও বান্দার মাঝে নিতান্ত গোপন ইবাদত তাই এর মাধ্যমে আল্লাহ ও বান্দার মাঝে সম্পর্ক দৃঢ়তর হয়
১০) আল্লাহর ইবাদতের এক অভূতপূর্ব ট্রেনিং স্বরুপ।
রমজান আসার পূর্বে যে দোয়াটি বেশী বেশী পড়া উচিত ...
“আল্লাহুম্মা বারিকলানা ফি রজাবা ওয়া শাবান ওয়া বাল্লিগনা রমজান”
অর্থ -হে খোদা রজব এবং শাবান মাসদয়কে তুমি আমাদের জন্যে মোবারক মাসে পরিনত করে দাও এবং আমাদের রমজান পর্যন্ত পৌছে দাও...
আসুন, রমজানের শুরুতেই
পরিবর্তনের জন্য আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই। আত্মশুদ্গধি অর্জনের পূর্ণ
প্রস্তুতি নিই।
রহমাত, মাগফিরাত এবং নাজাতের
মাস মাহে রমজান।এ মাসেই মহা গ্রণ্থ আল কুরআন নাজিল হযেছিল তাই হাজার
মাসের চাইতেও মূল্যবান এ মাস। এ মাসে ১টি নফল নামাজ ১টি ফরজ নামাজ এর সমান,
আর ১টি ফরজ ৭০টি ফরজ নামাজ এর সমান। সুবহানআল্লাহ। এক রাকাত নামাজ ৭০
রাকাত নামাজের সমান, কেউ যদি ফজর-এ ২ রাকাত, জোহরে ৪ রাকাত, আসরে ৪ রাকাত,
মাগরিবে ৩ রাকাত এবং এশার ৪ রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করে তবে সে ১ দিনেই ১১৯০
রাকাত শুধু ফরজ নামাজই আদায় করলো আর বাকি নামাজ গুলো যোগ করলে তার পরিমান
হবে আরো অনেক বেশি।
আমরা কতটুকু আমল যোগ করতে পেরেছি নিজেদের
আমলনামায়। জীবনে আরেকবার রমজান পাবেন তার কোনো গেরান্টি নেই, জীবনের সকল
গুনাহ মাপের এটাই সুবর্ণ সুযোগ। নামাজ ছাড়াও কুরআন তিলাওয়াত এর ক্ষেত্রেও
একই সুবর্ণ সুযোগ এক অক্ষরে যেটি ১০ নেকি ছিল অন্য সময়ে, আর রমজান মাসে
সেটি ৭০০ নেকি। এ মাসে কাওকে ১ টাকা দান করলে ৭০ টাকাই দান করা হয়ে যাবে, ২
টাকা দান করলে ১৪০ টাকা দান করা হবে, ২ রাকাত নামাজ পড়লে ১৪০ রাকাত নামাজ
পড়া হয়ে যাবে। সকল ভালো কাজেই ১ এ ৭০, সারামাস এ সুযোগ আছে সচেতন হবার সময়
এখনি।
শুধু তাই নয় সেহরী, ইফতার আর তারাবীহ নামাজের
অনাবিল প্রশান্তি আপনার মনকে ১০০% পবিত্র করে দিবে। সুরা তারাবিহ এর চাইতে
খতম তারাবিহকে বেশি গুরুত্ব দিন। পাশাপাশি মিথ্যা কথা বলা থেকে বিরত থাকা,
যাবতীয় অন্যায় থেকে বিরত থাকা ছাড়াও ভালো কাজে সহযোগিতা আর মন্দ কাজ
থেকে দুরে থাকতে পারলেই আপনার প্রতিটি রোজা হবে পরিশুদ্ধ। রোজা আর দোয়া
কবুলের ক্ষেত্রে আর কোনো অন্তরায় থাকবেনা। এ মাসে বেশি বেশি ভালো কাজ করুন
যেন এ মাস থেকে শিক্ষা নিয়ে বাকি জীবন ভালোভাবে কাটাতে পারেন। বিভিন্ন
ফোরাম ব্লগ ফেইসবুক এ ভালো কাজের জন্য আহবান করুন, এতে যে সওয়াব পাবেন তাও
অন্য সময়ের তুলনায় ৭০ গুন বেশি পাবেন। ইফতার এর আগে দোয়া কবুল হয় তাই এ
সুযোগটিও হাতছাড়া করবেননা।
শব ই কদর এর রাতের অভাবনীয়
সুযোগতো থাকছেই যে রাতে দোয়া কবুলের ১০০% গেরান্টি থাকে। আলহামদুলিল্লাহ।
জান্নাত লাভের সুবর্ণ সুযোগ আপনাকে হাতছানি দিয়ে যাচ্ছে। এ মাসে সামর্থ্য
থাকলে কেউ ওমরাহ করেও আসতে পারেন। রমজান ছাড়াও মদিনা শরিফ এ ১ রাকাত নামাজ
৫০ হাজার রাকাত নামাজের সমান আর মক্কা শরিফ এ ১ রাকাত নামাজ ১ লক্ষ্
রাকাত নামাজের সমান। আর রমজান মাসে সেই সওয়াব এর পরিমান যথাক্রমে ৩৫ লক্ষ
এবং ৭০ লক্ষ রাকাত নামাজের সমান। শুধুমাত্র রমজান মাসের জন্যই এ সুযোগ।
আমরা হয়ত অনেকেই এসব কথা জানি, যারা জানি তারা যেন মানার চেষ্টা করি, আর
যারা জানিনা তারা যেন আরো জানার চেষ্টা করি।